মোঃ মুক্তার হোসেন (রাজশাহী) ।।
রাজশাহীর ঘোষপাড়া মোড় থেকে লক্ষীপুর ঝাউতলা পর্যন্ত চিকিৎসার নামে ব্যাঙ্গের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা অবৈধ ক্লিনিক-হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে রাজশাহীতে অভিযান শুরু হয়েছে। তবে অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। অভিযানের বিষয়টি ঘোষণা দিয়ে প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে হওয়ায় অবৈধ প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে পালাচ্ছে মালিকরা। এছাড়া অবৈধ প্রতিষ্ঠানের সুনির্দিষ্ট তালিকা না থাকায় অভিযান পরিচালনা করতেও বেগ পেতে হচ্ছে।
তবে এরমধ্যেও মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) সকাল থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের চারটি টিম ও রাজশাহী সিভিল সার্জনের একটি টিম এই অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে নগরীতে ১২টি এবং উপজেলায় ৮টি অবৈধ প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
সংশ্লিষ্ট দপ্তর সূত্রে জানা যায়, রাজশাহীতে কি পরিমাণ অবৈধ ক্লিনিক-হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে, তার নির্দিষ্ট কোনো তালিকা নেই। যেসব প্রতিষ্ঠান নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেন, তাদের মধ্যে যারা নিবন্ধনের শর্তের ব্যত্তয় ঘটান কিংবা নতুন করে নবায়ন করেননি শুধু তাদের তালিকা আছে। সে অনুযায়ী অবৈধ ক্লিনিক-হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সংখ্যা প্রায় ১৬৪টি। এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
অভিযান চলাকালে নগরীতে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান তালা দিয়ে পালিয়ে যায় বলে জানা গেছে। এমন বিড়ম্বনার কথা এর আগেও তুলে ধরেছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর। তবে এবার যেসব প্রতিষ্ঠান তালা দিয়ে পালিয়ে গেছে তাদেরকে অবৈধ হিসেবে গণ্য করে খুললেই আইনগত কঠোর ব্যবস্থার হুশিয়ারি দিয়েছেন রাজশাহী সিভিল সার্জন ডা. আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক।
তিনি জানান, রাজশাহীতে প্রকৃতপক্ষে অবৈধ ক্লিনিক-হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সংখ্যা কত, তার সুনির্দিষ্ট তালিকা নেই। তবে এই সংখ্যাটা ১৬৪ এর কিছু কমবেশিই হবে।
এবিষয়ে ক্লিনিক-হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিক সেন্টার সংগঠনগুলোর কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, অভিযান চলাকালে অনেকে আগেই টের পেয়ে প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেন। এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর হচ্ছি। এদেরকে অবৈধ ধরে নিয়ে যখনই খুলবে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রাজশাহী বিভাগীয় (স্বাস্থ্য) পরিচালক ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার জানান, কী পরিমাণ অবৈধ ক্লিনিক-হাসপাতাল-ডায়াগনষ্টিক সেন্টার আছে এই তালিকা প্রস্তুত করা সম্ভব হয় নি। এটি করতে হলে ভিন্ন পন্থায় সেটা করতে হবে। আপাতত সংখ্যাটা অজানা। আর সমস্যা হলো-অভিযানের বিষয়ে জানতে পারলেই প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে পালাচ্ছে। এ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ করে এদের বিষয়েও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, অভিযানে বন্ধ ঘোষণা করা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো-নগরীর নিউ ইবনে সিনা হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, স্পন্দন ডায়াগানস্টিক সেন্টার, রেইনবো ডায়াগানস্টিক সেন্টার, বিসমিল্লাহ ডায়াগানস্টিক সেন্টার, বসুন্ধরা হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগানস্টিক সেন্টার, ফেয়ার ল্যাব ডায়াগানস্টিক সেন্টার, এশিয়ান ডায়াগানস্টিক সেন্টার, নিউ লাইফ হাসপাতাল, আল আমিন ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টার, মেডিননোভা ডায়াগানস্টিক সেন্টার, সেন্ট্রাল ল্যাব অ্যান্ড মেডিকেল সার্ভিসেস ও আল মদিনা নার্সিং হোম। এছাড়া চারঘাটের গ্রীন সিটি হাসপাতাল, বাগমারার নিউ বাগমারা ডায়াগানস্টিক সেন্টার, সাফল্য ডায়াগানস্টিক সেন্টার, ডক্টরস ডায়াগানস্টিক সেন্টার অ্যান্ড ক্লিনিক ও কালামি হেলথ কেয়ার। বাঘার মঞ্জু ডিজিটাল ডায়াগানস্টিক সেন্টার ও নাজিরা ডিজিটাল ডায়াগানস্টিক সেন্টার। গোদাগাড়ীর সততা ডায়াগানস্টিক সেন্টার।
Leave a Reply