খবরের ফেরিওয়ালা প্রতিবেদন
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, কৃষি মন্ত্রণালয় পজিটিভ হলে ডিম আমদানি করা হবে। দাম নির্ধারণ হবে আলোচনার মাধ্যমে। ভারত থেকে ডিম আমদানি করে কম মূল্যে ভোক্তাদের দেওয়ার পক্ষে আমি। আজই কৃষি মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন পণ্যের দাম নির্ধারণ বিষয়ে কাগজ পাঠাব। তবে কৃষকদের স্বার্থের বিষয়টিও দেখতে হবে।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে শনিবার ‘মিট দ্য ওকাব উইথ টিপু মুনশি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন টিপু মুনশি। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠুর সঞ্চালনায় সভায় ছিলেন ওকাবের আহ্বায়ক কাদির কল্লোল, ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনের সাবেক প্রেস মিনিস্টার ফরিদ হোসেন।
টিপু মুনশি বলেন, আমাদের ভোক্তা ও কৃষক উভয়কেই দেখতে হবে। যথেষ্ট হিমাগার না থাকায় অনেক পেঁয়াজ পচে যায়। ফলে সেপ্টেম্বরে আমাদের পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। সেপ্টেম্বরে পেঁয়াজ উৎপাদন করার চিন্তা করা হচ্ছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গির কারণে আমরা চীন থেকে কিছুটা সরে আসছি। তাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর জন্য চীনের ওপর নির্ভরশীলতা কিছুটা কমেছে। তারপরও আমাদের আমদানিতে চীন-ভারতের ওপর নির্ভরতা আছে। মূলত আমাদের ইন্ডাস্ট্রি তৈরি না হওয়া পর্যন্ত এ নির্ভরশীলতা থাকবে। বৈশ্বিক চাওয়া মেন মেইড ফাইবার আমাদের নেই। তাই বিদেশ থেকে আনতে হচ্ছে। নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।
ভিন্ন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা যে যাবে না, তা এখন বোঝা যাচ্ছে। যাই হোক, আমরা সমস্যাগুলো অ্যাডজাস্ট করেই এগিয়ে যাচ্ছি। রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার মাধ্যমেই মিয়ানমারের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে। মিয়ানমারে কিছু গার্মেন্টস বন্ধ হওয়ায় আমাদের রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
টিপু মুনশি বলেন, মানবাধিকার নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ থাকলেও তা আমাদের বাণিজ্যে প্রভাব ফেলবে না। গতবারের তুলনায় এবার ২০ শতাংশ বাণিজ্য বৃদ্ধি পেয়েছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, ডলারের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা চাই তৈরি পোশাক খাত তার ধারাবাহিকতা বজায় রাখুক। পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তি ও চামড়া খাতে উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা করছি। ১০ পণ্যের উৎপাদন বাড়াতে পারলে আমাদের রপ্তানি বাড়বে। আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি এটি বাড়াতে। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর অত্যন্ত সফল হয়েছে। অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক বিষয়ে কতগুলো আশাব্যঞ্জক আলোচনা হয়েছে।
টিপু মুনশি বলেন, আজকের কাগজে দিয়েছে, সামনের বছর আরও মন্দার দিকে যাবে। প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন, সামনের বছরটা পৃথিবী আরও খারাপের দিকে যাবে। সার্বিক অবস্থাটা যে স্বস্তিদায়ক তা কিন্তু নয়। এজন্য আমাদের খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে হবে। এখানে ক্রাইসিস হলে বড় রকমের বিপদ আছে আমাদের। সেক্ষেত্রে চেষ্টা করা হচ্ছে। খাদ্য উৎপাদনে যদি আমরা ভালো করি, দেশের প্রয়োজনটুকু যদি মেটাতে পারি তাহলে আমরা বড় রকমের বিপদ থেকে রক্ষা পাব। পাশাপাশি বৈশ্বিক বাজারে যদি পণ্যের চাহিদা কমে যায়-সেটি চিন্তার ব্যাপার।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার সচেতন আছে। আমদানি কমানোতে জোর দেওয়া হচ্ছে। রপ্তানি বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আশপাশের দেশগুলো ভারত ও চীনে যদি কিছুটা রপ্তানি বাড়াতে পারি। সেটা একটা ভালো খবর হবে। সব মিলিয়ে বৈশ্বিক পরিস্থিতি যদি উন্নত না হয় তাহলে আমরা এ পরিস্থিতি খুব শিগগিরই কাটিয়ে উঠতে পারব বলে মনে হয় না।
ভারত ও চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে কি উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এটা রাতারাতি করা সম্ভব নয়। আমাদের প্রচুর ‘র’ ম্যাটেরিয়ালস আনতে হয় ভারত ও চীন থেকে। এজন্য বাণিজ্য ঘাটতি। আমাদের এখানে যদি এসব শিল্পকারখানা করতে পারি তাহলে কিছুটা কমে আসবে। তা না হলে ভারত ও চীনের ওপর নির্ভরশীলতা থেকে যাবে।
Leave a Reply